Recents in Beach

বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে দেরি কেন - সম্পাদকীয় মতামত Editorial News Prothom Alo for BCS and Others Written


শিক্ষার্থীদের দ্রুত টিকার ব্যবস্থা করুন

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ই অগ্রাধিকার পাওয়ার কথা ছিল। বাস্তবে বিশ্ববিদ্যালয়ই খোলা হচ্ছে সবার শেষে। প্রথমে ধারণা দেওয়া হয়েছিল, টিকা দিয়েই সব শিক্ষার্থীকে শ্রেণিকক্ষে নেওয়া হবে। কিন্তু সরকার টিকার ব্যবস্থা করতে পারেনি। তার আগেই ১২ সেপ্টেম্বর থেকে প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা সরাসরি শ্রেণিকক্ষে পাঠ নিচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে, তাদের টিকা নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। যাঁদের বয়স ১৮ বছরের ওপরে, তাঁদের টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও খুব কমই সেই সুবিধা পেয়েছেন।

এ অবস্থায় টিকার ঘাটতির কারণে যদি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলতে বিলম্ব হয়ে থাকে, তা খুবই দুঃখজনক। সরকারের পক্ষ থেকে আগে বলা হয়েছিল, অক্টোবরে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে। সে অনুযায়ী প্রস্তুতিও নিয়েছিল বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীকাল শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ২৭ সেপ্টেম্বরের পর খুলে দেওয়া যেতে পারে, তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৫ অক্টোবর আবাসিক হল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় অক্টোবরের শেষার্ধে খোলার ঘোষণা দিয়েছে। এ ক্ষেত্রেও সমন্বয় ও প্রস্তুতির ঘাটতি লক্ষণীয়।

প্রথম আলোর খবর অনুযায়ী, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অধিকাংশ শিক্ষার্থী এখনো করোনার টিকা নিতে পারেননি। টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন অর্ধেকের মতো শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের টিকাপ্রাপ্তি ও নিবন্ধনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কাছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তথ্য দেওয়ার কথা। ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের মোট ৫১টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ২৪টি ইউজিসিকে তথ্য দিয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, ৫৫ শতাংশ শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছেন। প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন মাত্র ১৬ শতাংশ। যদিও ওই ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয় সব শিক্ষার্থীর পুরো তথ্য দিতে পারেনি।

অন্যদিকে ১৩ সেপ্টেম্বর মেডিকেল কলেজগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। অনলাইনে মেডিকেল কলেজের পাঠদান প্রায় অসম্ভব। দ্রুত মেডিকেল কলেজ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। মেডিকেল শিক্ষা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন। মেডিকেল শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ টিকা পেয়ে গেছেন।

টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থীদের পিছিয়ে পড়ার কারণ সময়মতো তাঁদের টিকার আওতায় আনার ক্ষেত্রে মনোযোগ না থাকা। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিল। শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের। সবকিছু মিলিয়ে উদ্যোগ ও সমন্বয়ের অভাব ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় না খোলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক প্রতীকী ক্লাস নিয়েছেন। এ ধরনের ন্যায়ানুগ প্রতিবাদ সরকারের চৈতন্যোদয় ঘটাতে পারবে কি না, সে প্রশ্নের জবাব ভবিষ্যৎই দিতে পারে।

আমরা মনে করি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে যে হযবরল অবস্থা চলছে, তার দায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কেউ এড়াতে পারে না। তাদের সম্মিলিত ব্যর্থতার কারণেই লাখ লাখ শিক্ষার্থী এখনো শ্রেণিকক্ষের বাইরে আছেন। আবাসিক হলে উঠতে পারছেন না। সরকারের নীতিনির্ধারকদের কথা শুনলে মনে হবে টিকা কোনো সমস্যা নয়। যদিও বাস্তবে দেখা গেছে, যত গর্জে তত বর্ষে না। তাঁরা প্রতিদিন কোটি কোটি ডোজ টিকার খোয়াব দেখাচ্ছেন। অথচ ৩০ থেকে ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থীর টিকার ব্যবস্থা করতে পারছেন না।

আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় টিকা যত দ্রুত সম্ভব সংগ্রহ করে তাঁদের শ্রেণিকক্ষে ফিরে আসা নিশ্চিত করা হবে।

 Editorial News  Prothom Alo,

বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে দেরি কেন - সম্পাদকীয় মতামত Editorial News Prothom Alo for BCS and Others Written

Post a Comment

0 Comments